Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

বঙ্গবন্ধুর কৃষি ভাবনায় আজকের কৃষি

ড. মো. আবদুল মুঈদ
১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্ট ঘাতকের নিষ্ঠুর বুলেটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রাণ হারিয়েছেন। জাতীয় শোক দিবসে বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারের সকল শহীদের স্মৃতির প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। বঙ্গবন্ধু যদি প্রাণ না হারাতেন তবে এবার আমরা তাঁকে নিয়েই বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার সহিত পালন করতাম বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী। কাকতালীয়ভাবে একই সাথে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ তারিখে বাংলাদেশ তাঁর স্বাধীনতার অর্ধশত বার্ষিকীতে পদার্পণ করবে। এই দুয়ে মিলেই রূপ নিয়েছিল এবারের মুজিব শতবর্ষ। বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতিকে যেমন সেদিন বিলীন করে দিয়েছিল ঘাতকের বুলেটের আঘাত, একইভাবে এবারের মুজিব শতবর্ষ পালনের সময় প্রস্তুতি যখন সম্পন্ন, ঠিক তখনই গেল ৮ই মার্চ, ২০২০ কোভিড-১৯ নামক ভাইরাসের আক্রমণে করোনা নামক রোগের প্রকোপে সমস্ত প্রস্তুতিতে ভাটা ফেলে দিলো। আর তাই শত বাধা বিপত্তিকে উপেক্ষা করেই সীমিত আকারে হলেও পালিত হচ্ছে মুজিব শতবর্ষ উদযাপন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরও সে থেকে ব্যতিক্রম নয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বলেছিলেন ‘বাংলার মাটি সোনার চেয়ে খাঁটি তাইতো বারবার বিদেশ থেকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে ও শোষণকে টেনে এনেছে।’ এই বাংলার মাটি বাংলাদেশের মাটি, যদি সোনার চেয়ে খাটি না হতো তাহলে এতদিন আমাদের পরাধীন থাকতে হতো না। তিনি আরো বলেন, বাংলার মাটি দুনিয়ার কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। এই মাটিতে সোনালি ফসল ফলিয়ে সোনার বাংলা তৈরি করা সম্ভব। কৃষি বিপ্লবের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের গ্রামের দিকে নজর দিতে হবে, কৃষকদের রক্ষা করতে হবে। অধিক শস্য উৎপাদন করার জন্য মানুষকে শিক্ষিত করে তুলতে হবে। জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়া চলবে না। সেদিনই তিনি সবুজ বিপ্লবের ডাক দেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে একটি নারিকেলের চারা রোপণ করে। কৃষিবিদদের ‘ক্লাস ওয়ান’ কর্মকর্তা হিসেবে ঘোষণাও সেদিন তিনি দিয়ে আসেন। এইভাবে কৃষি-কৃষক-  কৃষিবিদদের সাথে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন কৃষি ও কৃষকবান্ধব মানুষ। সমৃদ্ধ ও স্বনির্ভর উন্নত বাংলাদেশ এবং সোনার বাংলা গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলার জন্য  কৃষির উন্নতির কোন বিকল্প ছিল না। সেই লক্ষ্যে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছিল তাঁর অন্যতম কাজ। তিনি জানতেন মানুষের প্রথম চাহিদা খাদ্য আর খাদ্য নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে তিনি কৃষি এবং কৃষকের উন্নয়নের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের জন্য গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করে যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশকে কৃষি অর্থনীতিতে স্বনির্ভর করে তোলার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ ও কর্মসূচি গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন কৃষি ও কৃষকের উন্নতি বিধান নিশ্চিত করা না গেলে জাতির ভবিষ্যৎ অন্ধকার। তিনি স্বপ্ন দেখতেন কৃষি বিপ্লবের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ করতে। এ জন্য তিনি উচ্চতর শিক্ষা গবেষণা প্রশিক্ষণ এবং শহরের দিকে দৃষ্টি দিয়েছিলেন। জাতীয় বৈদেশিক নীতির জন্য তিনি বিশ্বজুড়ে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু প্রথম বাজেটে কৃষিখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখার ব্যবস্থা করেছিলেন। ২১ দফার প্রতিটা দফাই ছিল কোনো না কোনোভাবে কৃষি ও কৃষকের মঙ্গলকামি। কৃষির উন্নতির জন্য সমবায় কৃষি ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। বন্যা ও খরার হাত থেকে কৃষককে রক্ষার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। সরকারি ইজারাদারি প্রথা বিলুপ্ত করেন।
সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ঢাকা সফরে এসে বঙ্গবন্ধুকে অভিহিত করেছেন ‘বিশ্ব নেতা’ হিসেবে, যা অনুসরণীয় হতে পারে অন্যান্য দেশের কাছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাও কিন্তু অনুসরণ করছেন তার বাবার প্রদর্শিত পথকেই। করোনার প্রভাবে বাংলাদেশে দিনে দিনে মৃত্যুর মিছিল যখন বাড়ছে, ঠিক তখন এই রোগ হতে মুক্তির হাতিয়ার হিসেবে ঢালরূপে আবির্ভূত হয়েছে বাংলার কৃষি। সেই ঢাল হাতে নিপুণ সৈনিক বাংলার কৃষক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সর্বস্তরের কর্মচারীবৃন্দ। আর এই পুরো কর্মযজ্ঞের সফল পরিচালক বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম ব্যস্ত মন্ত্রণালয় কৃষি মন্ত্রণালয়, যার মূল চালিকা আসনে বসে আছেন এই কৃষি পরিবারেরই একজন খ্যাতনামা ব্যক্তিত্ব মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী কৃষিবিদ ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, এমপি। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি বান্ধব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ‘এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে’ এই সেøাগান পালনের জন্য দেশের এই মহামারীতে সম্ভাব্য খাদ্য সংকট মোকাবেলায় মাননীয় কৃষি মন্ত্রীর পদক্ষেপগুলো রীতিমত বিশ্ব নজির হিসেবে ইতোমধ্যেই সমাদৃত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন দানাদার শস্য ধান উৎপাদনে বিশ্বে ৩য় স্থান অর্জনকারী দেশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে যেখানে বাংলাদেশের ধানের উৎপাদন চাহিদা ছিলো ৩.৫০ কোটি টন, সেখানে আমরা উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি ৩.৬৪ কোটি টন। এই উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্যের কারণেই এখন আমাদের ১৯.৩ লক্ষ টন ধারণ ক্ষমতার মধ্যে ইতোমধ্যেই ১২.৬৫ লক্ষ টন মজুদ করা সম্ভব হয়েছে।
কৃষি উৎপাদনের পাশাপাশি করোনার প্রাদুর্ভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন খেটে খাওয়া, হতদরিদ্র ও ভাসমান মানুষেরা কথা মাথায় রেখে সরকার বহুমুখী উদ্যোগ নিয়েছে। সারাদেশে নিম্ন আয়ের মানুষদের ১০ টাকা কেজি দরে ৯০ হাজার টন চাল দেওয়া হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা মোকাবেলায় গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য বিনামূল্যে ঘর, ছয় মাসের খাদ্য এবং নগদ অর্থ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এ পর্যন্ত ৬৪ জেলায় ১২ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা এবং প্রায় ৪৬ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা দিয়েছে। সরকার এই সমস্ত কার্যক্রমে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের সকল পর্যায়ের কর্মচারীরা দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে করোনার বিরুদ্ধে রীতিমতো যুদ্ধ ঘোষনা করেছে। এই যুদ্ধ করতে গিয়ে ১২ জুলাই, ২০২০ হিসাব মতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ১৩৯ জন কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। করোনার আগ্রাসনে মৃত্যুবরণ করে আমাদের মাঝ থেকে চলে গেছেন বগুড়ার উপপরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ আবুল কাশেম আযাদ (৫৮) ও একজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা। এতো ভয়াবহতার পরও থেমে নেই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যক্রম। গত ৭ই জুলাই, ২০২০ তারিখে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে মাননীয় কৃষি মন্ত্রী কর্তৃক বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে গণভবন প্রাঙ্গণে একটি ফলদ, একটি বনজ এবং একটি ঔষধি গাছের চারা রোপণের মাধ্যমে সারাদেশে ১ কোটি চারা বিতরণ ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশে ২০১৮-১৯ সালের হিসাব মতে মোট ৭ লাখ ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফলের আবাদ হয়েছিল, যার মধ্যে প্রধান ফল হিসেবে আম আবাদের জমি ছিলো প্রায় ১ লাখ ৮৮ হাজার হেক্টর আর উৎপাদন ছিলো ২২ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন, কাঁঠাল আবাদ হয়েছিল ৭১ হাজার ছয়শত হেক্টর জমিতে যার ফলন ছিল ১৮ লাখ ৮৭ হাজার মেট্রিক টন, আর লিচু ছিল ৩১ হাজার চারশত এর মতো, যার ফলন ছিল ২ লাখ ২৬ হাজার মেট্রিক টন। এ বছর ২০১৯-২০ সালে সেই লক্ষমাত্রা বেড়ে প্রায় ১ লাখ ৮৯ হাজার হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে এবং প্রত্যাশিত উৎপাদন ২২ লক্ষ ৩২ হাজার মে.টন।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত কৃষিবিদদের যত আশা-আকাক্সক্ষা, চাওয়া-পাওয়া ছিল বা আছে, তার সবগুলোই পূরণ হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত নিজেস্ব চাওয়া থেকে এবং পরবর্তীতে বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকারের প্রধান তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃষিবিদের দীর্ঘদিনের একটি দাবি ছিল কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে একজন কৃষিবিদের জন্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবার সরকার গঠনের পর কৃষিবিদদের সেই আশাকে বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্ব তুলে দেন তাঁরই অত্যন্ত আস্থাভাজন ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, এমপির হাতে। সেই থেকে অক্লান্ত পথ চলা তাঁর। এবারের মুজিববর্ষ পালনে তাই তিনিসহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গ্রহণ করেছে বিভিন্ন কর্মসূচি। কৃষি নির্ভর এই বাংলাদেশ যেন করোনাকালীন সময়ে কোনোরূপ খাদ্য সংকটে না পড়ে তার পূর্ণ প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই গ্রহণ করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরে আউশ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩.২৯৬ লক্ষ হেক্টর জমিতে ৩৬.৪৫ লক্ষ মে. টন, আমন ৫৮.৯৫ ২৯৬ লক্ষ হেক্টর জমিতে ১৫৩.৮ লক্ষ মে.টন। কৃষিবান্ধব এই সরকার বরাবরই মনে করেন, যে কোন দুর্যোগ মোকাবেলায় কৃষি হবে প্রধান রক্ষাকবচ হাতিয়ার। ‘কৃষিতেই হবে সমৃদ্ধ আগামীর বাংলাদেশ’ মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার। য়
মহাপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ঢাকা। ফোন : ৯১৪০৮৫০, ই-মেইল : dg@dae.gov.bd

 

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon